শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। কাজেই সবার জন্য শিক্ষা অর্জন করা মানুষের মৌলিক অধিকার। এ অধিকারকে যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বের অনেক দেশ আজ উন্নত দেশ হিসেবে উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করেছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুগের সাথে সংগতিপূর্ণ বিকাশের জন্য আমরা প্রত্যেকেই ভাবি নিজ নিজ সন্তানদের নিয়ে। প্রকৃতির সন্তান মানব শিশুকে পরিশুদ্ধ হতে হয়, পরিপুর্ণ হতে হয় স্বীয় সাধনায়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষায় হলো আমাদের মূলমন্ত্র। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্য হলো আচরণের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন। আর এ লক্ষ্যে তাদেরকে সৃজনশীল, স্বাধীন, সক্রিয় এবং দায়িত্বশীল সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। এ জন্য প্রয়োজন যোগ্য শিক্ষকমন্ডলী এবং উপযুক্ত শিক্ষাদান পদ্ধতির সমন্বয়ে একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ। আমি বিনয়ের সাথে দাবী করি নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে এসব কিছুর সমন্বয় ঘটানো সম্ভব হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মজ্জাগত প্রতিভা সহজে বিকাশের জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, আনুষ্ঠানিক, খেলাধুলাসহ নানাবিধ শিক্ষা।
নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষা ও কম্পিউটার প্রশিক্ষন ব্যাবস্থা খুবই শক্তিশালী যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
নলিনী কান্ত রায়
প্রধান শিক্ষক
নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, নীলফামারী।
বাংলার উত্তর জনপদের একটি নাম নীলফামারী। বীর সংগ্রামী নুরলদীনের কৃষক বিদ্রোহ ও ফকির বিদ্রোহ খ্যাত জনপদ নীলফামারী। শুধু বিদ্রোহ আর সংগ্রামই নয় তিস্তা, চাড়াল কাটা, বুড়িখোড়া, বামনডাঙ্গা, যমুনেস্বীর পলি বিধৌত উর্বর এর মাটি। কালের স্রোতে হারিয়ে গেছে অনেক কিছুই আবার কিছু কিছু জিনিস পূর্বের তুলনায় খ্যাতি ছড়িয়ে চলেছে। তেমনি একটি নাম নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়। নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়টি নীলফামারী শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। নীলফামারীর প্রধান শহর থেকে জলঢাকা অভিমূখী রাস্তায় বিদ্যালয়টির প্রধান ফটক অবস্থিত। বিদ্যালয়টির মোট আয়তন ১৩.২৩ একর। একটি পুরাতন লাল ভবন, দুটি নতুন একাডেমিক ভবন, একটি বিজ্ঞান ভবন, প্রধান শিক্ষকের বাসভবন, একটি মসজিদ, একটি তিনতলা বিশিষ্ট ছাত্রাবাস, প্রতিবন্ধী ছাত্রাবাস, একটি ছোট গার্ডশেড এবং গার্ডের দুইরুম বিশিষ্ট বাসভবন নিয়ে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো অবস্থিত। বিদ্যালয়টিতে দুটি শিফট চালু রয়েছে। প্রভাতি শিফট সকাল ৭.০০ টায় শুরু হয়ে ১১.৪৫ পর্যন্ত চলে। প্রভাতি শাখা ও দিবা শাখার একাডেমির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দুজন সহকারী প্রধান শিক্ষক নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
বর্তমান নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৮৮২ সালে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ইংলিশ হাইস্কুল হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তখন নীলফামারী মহকুমায় চাকুরীরত কর্মচারী, ব্যবসায়ী ও বিদ্যানুরাগী ব্যক্তিদের দ্বারা এটি উন্নতি লাভ করে। তৎকালীন জমিদার রেবতী মোহন চৌধুরী, তমিজউদ্দীন চৌধুরী ও রুস্তম আলী আহমেদ নীলফামারীতে শিক্ষার আলো ছড়ানোর জন্য ১৩.২৩ একর জমি দান করেন। যার উপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। ১৯১৪ সালে তদানিন্তন স্কুল কমিটি বিদ্যালয়ের পুরাতন লাল ভবনটি নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত সরকার বিভিন্ন মেয়াদে সহায়তা করেছেন এবং ১৯৬৮ সালে বিদ্যালয়টিকে নীলফামারী সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় হিসাবে জাতীয়করণ করেন।